ফেসবুক-গুগলের বিরুদ্ধে দাঁড়ালেন যারা

ফেসবুক, গুগলসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান একসময় মানুষের প্রয়োজনে তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু এগুলো এখন মানুষের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। তাই সামাজিক যোগাযোগের নেটওয়ার্ক ও স্মার্টফোনের ক্ষতিকর প্রভাবের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালির একদল কর্মী জোট বাঁধছেন। তাঁদের অনেকেই ফেসবুক, গুগল তৈরিতে সহায়তা করেছিলেন।

নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগের ক্ষতির বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানানো গবেষকেরা ‘সেন্টার ফর হিউম্যান টেকনোলজি’ নামের একটি ইউনিয়ন তৈরি করেছেন। ইউনিয়নটি অলাভজনক গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণ সংস্থা কমনসেন্স মিডিয়ার সঙ্গে মিলে প্রযুক্তিতে আসক্তিবিরোধী লবিং করার পরিকল্পনা করছে। যুক্তরাষ্ট্রের ৫৫ হাজার সরকারি স্কুলে প্রচার চালানোর উদ্দেশ্য রয়েছে তাঁদের।
ওই প্রচার কর্মসূচির নাম হবে ‘ট্রুথ অ্যাবাউট টেক’। এতে প্রাথমিকভাবে ৭০ লাখ মার্কিন ডলারের তহবিল জোগাবে কমনসেন্স। আর এই তহবিল বাড়াতে কাজ করবে সেন্টার ফর হিউম্যান টেকনোলজি। এরই মধ্যে কমনসেন্স গণমাধ্যম খাতে পাঁচ কোটি মার্কিন ডলার অনুদান দিয়েছে। তাদের লক্ষ্য হচ্ছে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের মধ্যে প্রযুক্তির নেতিবাচক দিক সম্পর্কে জানানো। বিশেষ করে স্মার্টফোন ও সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ব্যবহারে যে বিষণ্নতা তৈরি হয়, সে সম্পর্কে সবাইকে সজাগ করা।

গুগলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সাবেক কর্মী ট্রিসটান হ্যারিস বলেন, তাঁরা সচেতনতা বাড়াতে যুক্ত হয়েছেন। তাঁরা জানেন, প্রতিষ্ঠানগুলো কী পদক্ষেপ নিতে পারে, কীভাবে কাজ করে বা কীভাবে কারিগরি কাজগুলো করা হয়। তরুণদের মধ্যে প্রযুক্তির যে প্রভাব, তা নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে বড় ধরনের বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। গত জানুয়ারি মাসে ওয়াল স্ট্রিটের দুজন বড় বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে অ্যাপলের ওপর চাপ এসেছে। তাদের পণ্য ব্যবহারের ফলে শিশুদের ওপর কী ধরনের প্রভাব পড়ে তা অ্যাপলকে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে শিশুরা যাতে আইফোন ও আইপ্যাড সীমিত আকারে ব্যবহার করতে, পারে সেই পদ্ধতিও বের করতে বলা হয়।
শিশু চিকিৎসক ও মানসিক চিকিৎসকেরা সম্প্রতি ফেসবুককে শিশুদের জন্য চালু করা মেসেঞ্জার সেবা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। অভিভাবকেরা ইউটিউব কিডস নিয়েও উদ্বেগ জানাচ্ছেন।
সেন্টার ফর হিউম্যান টেকনোলজি জোটে গুগলের কর্মী হ্যারিস ছাড়াও ফেসবুকের সাবেক পরিচালন কর্মকর্তা স্যান্ডি প্যারাকিলাস, অ্যাপলের সাবেক কর্মী লিন ফক্স, গুগলের যোগাযোগ কর্মকর্তা ডেভ মরিন, ফেসবুকের নির্বাহী জাস্টিন রোজেনস্টেইনের মতো ব্যক্তিরা আছেন।
জোটে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা আশা করছেন, শিগগিরই তাঁদের দল আরও ভারী হবে। তাঁদের প্রথম প্রকল্প হবে প্রযুক্তিশিল্পকে নতুন করে গড়া। স্বাস্থ্যের ওপর যাতে প্রযুক্তি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে না পারে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করা।

Comments

Popular posts from this blog

CLASSIFICATION BASED ON SIZE AND CAPABILITY